বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় বিএনপিকে দায় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক।’
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘হত্যা ও হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা, ভাঙচুর, নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার ও কারান্তরীণের ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে যে, সরকারের ভিতে কম্পন শুরু হয়েছে।’
এর আগে গত সোমবার (২২ জুলাই) ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে দেওয়া বক্তব্যে গত কয়েকদিনে সারা দেশে যে তাণ্ডব চলেছে, তার জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
তিনি বলেন, ‘দ্রুত এই দুর্বৃত্ত শিবির-জামায়াত, বিএনপির সন্ত্রাসী, এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। ১৩/১৪-তে অগ্নিসন্ত্রাস যারা করেছে, তাদের অনেককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবার একই চেহারায়। তবে এবার অত সহজে ছাড়া হবে না।’
প্রসঙ্গত, ইতোমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ দলটির ডজনখানেকের বেশি কেন্দ্রীয় নেতা, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, ১২ দলীয় জোটের সৈয়দ এহসানুল হুদাসহ অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলে রাজনৈতিক নেতাদের কাউকে-কাউকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল (সোমাবার, ২২ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে উদ্দেশ করে যে বক্তব্য রেখেছেন, তা সম্পূর্ণ রূপে ভিত্তিহীন, কাল্পনিক এবং বিএনপির আদর্শের প্রতি কুঠারাঘাতের শামিল। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘দেশব্যাপী সংঘটিত সরকারি অপতৎরতা এবং পৈশাচিক ও বর্বরোচিত ঘটনা সারা বিশ্ব থেকে আড়াল করতে পরিকল্পিতভাবে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমল এবং স্বৈরাচার এরশাদ আমলেও এমন নির্বিচার হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়নি।’
‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা যে ধরনের বক্তব্য রাখছেন, তাতে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, তারা সরকারি দলের কোনও পদে অধিষ্ঠিত আছেন। আন্দোলনকে দমন করতে আওয়ামী সরকারের এই ধরনের আগ্রাসী ও নির্মম ভূমিকার নজির পৃথিবীতে নেই।’
বিবৃতিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নয়া পল্টনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের নিন্দা ও অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
এদিকে আজ বুধবার (২৪ জুলাই) বিকালে সংবাদ সম্মেলন করবেন বিএনপির মহাসচিব।