1. meghnaonline24@gmail.com : দৈনিক মেঘনা :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন

বিস্তারিত জানতে এসএমএস/ফোন করুন 👇

আপিল নিষ্পত্তির আগেই দুই জনের ফাঁসি কার্যকর, তোলপাড়!

রির্পোটারের নাম:
  • Update Time : বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১
  • ৩২৯ ০০০

 

‘আপিল নিষ্পত্তির আগেই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০১৭ সালে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে’- এমন খবরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর যশোর কারাগারে চুয়াডাঙ্গা জেলার মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার মেম্বার হত্যা মামলায় দুই আসামি পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

কোনো আসামির দণ্ড কার্যকর করার আগে নিয়ম অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আসামিপক্ষ আপিল করে থাকে। কিন্তু দুই আসামির করা আপিল আবেদন শুনানির আগেই তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।  প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চে শুনানির জন্য বুধবার কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) ছিল। কিন্তু মামলার শুনানি হওয়ার আগেই জানা গেল, আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়ে গেছে।

তবে কারা সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র দাবি করেছে, আইনগত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের মৃত বকুল মণ্ডলের মেঝো ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার হোসেনকে ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন গ্রামের বাদল সর্দারের বাড়িতে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির কতিপয় চরমপন্থি কুপিয়ে হত্যা করে। ওই দিনই নিহতের ভাই মুক্তিযোদ্ধা অহিম উদ্দীন বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল এ হত্যা মামলার রায় ঘোষিত হয়। রায়ে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির দুই আঞ্চলিক নেতা দুর্লভপুরের মৃত মুরাদ আলীর ছেলে আবদুল মোকিম ও একই গ্রামের মৃত আকছেদ আলীর ছেলে ঝড়ুসহ ৩ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং দুর্লভপুরের মৃত কুদরত আলীর ছেলে আমিরুল ইসলাম ও একই গ্রামের আবু বক্করের ছেলে হিয়াসহ ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। বাকি ১৬ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-২ এই রায় ঘোষণা করেন।

বিচারিক আদালতের রায়ের পর নিয়ম অনুসারে আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য মামলাটি হাইকোর্টে আসে। মামলার ডেথ রেফারেন্স নম্বর ছিল ৩৯/২০০৮। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২০১৩ সালের ৭ জুলাই ও ৮ জুলাই মামলার রায় ঘোষণা করেন। উচ্চ আদালতের রায়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত এক আসামি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২ জন আসামি আমিরুল ইসলাম ও হিয়ার দণ্ডাদেশ মওকুফ করা হয়। মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসির আদেশ বহাল থাকে। এরপর ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর রাত পৌনে ১২টায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকর হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির জানান, হাইকোর্ট ফাঁসির আদেশ দিলে এর বিরুদ্ধে ২০১৩ সালেই আপিল করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আসামির পরিবার দাবি করেছেন ৪ বছর আগে ফাঁসি কার্যকর হয়ে গেছে। হাইকোর্ট যখন তাদের ফাঁসির আদেশ দেন তখনই আমরা ২০১৩ সালে আপিল দায়ের করে রাখি। দীর্ঘদিন পর আজকে (বুধবার) তালিকায় আসে মামলাটি যেটি আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ১১ নম্বরে আছে।’

তিনি বলেন, ‘মামলাটি যখন তালিকায় আসে, তখন আমরা আসামির পরিবারকে খবর দেই। তখন আসামি মোকিমের স্ত্রী এসে জানান, চার বছর আগেই ফাঁসি কার্যকর করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। তার আগে কারাগারে তারা শেষ সাক্ষাতও করেছেন বলে তিনি জানান। ফাঁসি কার্যকরের পর লাশ এনে দাফনও করা হয়।’

ঘটনাটি আপিলের দৃষ্টিতে এনেছিলেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে হুমায়ন কবির বলেন, ‘আজকে (বুধবার) মামলাটি তালিকায় থাকলেও শুনানি হয়নি। যেদিন শুনানি হবে সেটি আদালতের দৃষ্টিতে বিষয়টি আনব। ঘটনাটি যদি সত্যিই ঘটে থাকে তাহলে নিশ্চয় কারও না কারও ভুলে হয়েছে। বিষয়টি বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য আবেদন জানাবেন বলে জানান এই আইনজীবী।

আপিল শুনানির আগে ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিনের নজরে আনা হয়। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি এখনও তেমন কিছু জানি না। না জেনে তো এ বিষয়ে বলা ঠিক হবে না।’

এদিকে বুধবার ‘আপিল নিষ্পত্তির আগেই যশোর কারাগারে ২০১৭ সালে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে’-এমন খবরে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

কারাগার সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আইনগত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। আপিল বিভাগে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকার পর এই দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে ‘মৃত্যুদণ্ড মওকুফের আবেদন’ করেন। রাষ্ট্রপতি এই আবেদন নামঞ্জুর করেন। ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সহকারী সচিব মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষতির এক পত্রে আবেদন নামঞ্জুরের বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এরপর আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ১৬ নভেম্বর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

তবে এ ব্যাপারে খুলনা বিভাগীয় কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) মো. ছগির মিয়া সাংবাদিকদের জানান, ‘আপিল নিষ্পত্তির আগেই যশোর কারাগারে ২০১৭ সালে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে’-এমন খবর তাদের নজরেও এসেছে। কারা কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

বিস্তারিত জানতে এসএমএস/ফোন করুন 👇

বিস্তারিত জানতে ছবিতে 👇 ক্লিক করে–ফেসবুকে এসএমএস করুন 👇

© All rights reserved © 2021
Theme Customized BY IT Rony