1. meghnaonline24@gmail.com : দৈনিক মেঘনা :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩১ অপরাহ্ন

বিস্তারিত জানতে এসএমএস/ফোন করুন 👇

আফগানদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে : কমান্ডার ‍সামি

রির্পোটারের নাম:
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২১
  • ১৪৪ ০০০

পুরো আফগান বাহিনীর সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করা হয়েছে বলে মনে করছেন আফগানিস্তান বাহিনীর কমান্ডার সামি সাদাত। তিনি বলছেন, তালেবান বাহিনী দেশের দখল নেওয়ার পর আফগানিস্তানের রাজনীতিবিদ এবং এতদিনের আমেরিকান সহযোগীরা পালানোর জন্য বিমানবন্দরে যে নজিরবিহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, তার মধ্যে দিয়ে আফগান বাহিনীর সদস্যদের কার্যত শত্রুর মুখে ফেলে যাওয়া হয়েছে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাদাত আফগানিস্তান ন্যাশনাল আর্মির ২১৫ মাইওয়ান্ড কর্পসের কমান্ডার হিসেবে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চাচলে তালেবানের সঙ্গে লড়াইয়ে ছিলেন কিছুদিন আগেও। তারই একটি লেখা গতকাল বুধবার প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস। সেখানে সাদাত বলেছেন, তিনি  ক্লান্ত, হতাশ এবং ক্ষুব্ধ।

আফগানিস্তানের জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সাদাত জানিয়েছেন, গত সাড়ে তিন মাস হেলমান্দ প্রদেশে তালেবান যোদ্ধাদের সঙ্গে দিন-রাত রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্যে কেটেছে তার।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং পশ্চিমা মিত্ররা এখন আফগান সৈন্যদের দুষছে। তারা বলছে, বিনা প্রতিরোধে হাল ছেড়ে দিয়েছে আফগান বাহিনী। তবে তাদের এমন আচরণের স্তম্ভিত সাদাত। কেন আফগান বাহিনীর প্রতিরোধ ভেঙে পড়ল, ‘ভেতরে’ আসলে কী ঘটেছিল, সেই কথাটাই  বলছে না তারা- এমনটাই দাবি এই কমান্ডারের।

আফগান আর্মির লড়াই করার ইচ্ছা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল এটা মেনে নিয়ে সাদাত বলছেন, আফগান সৈন্যরা এটা বুঝে গিয়েছিল যে, আমেরিকান অংশীদাররা আফগানীদের ত্যাগ করেছে। গত কয়েক মাসে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কথায়, তার শব্দ চয়নে যে অসম্মান আর যে বৈরিতা ছিল, তাতেই সৈন্যদের মধ্যে ওই ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছিল বলেও ধারণা সাদাতের।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাদাত লিখেছেন, কাবুল আর ওয়াশিংটনের মধ্যে যে রাজনৈতিক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তাতে আফগান বাহিনীর দমবন্ধ দশা হয়েছিল, তাদের কাজ ঠিকভাবে করার সামর্থ্যই কমে গিয়েছিল।

আফগান সেনাবাহিনীর তিন তারকা জেনারেল সাদাত দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে তালেবানের সঙ্গে লড়াইয়ে ১৫ হাজার সৈন্যের নেতৃত্ব দিয়েছেন ১১ মাস ধরে। সেই লড়াইয়ে শত শত অফিসার আর সৈন্যকে তাদের হারাতে হয়েছে।

আফগান বাহিনী কেন ভেঙে পড়ল, তার তিনটি কারণ নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত নিবন্ধে তুলে ধরেছেন সাদাত।

প্রথমটি হলো ২০২০ সালে দোহায় তালেবানের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই শান্তি চুক্তি। ওই চুক্তিতেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীকে সরিয়ে নেওয়ার একটি সময়সীমা ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল। সাদাতের ভাষায়, ওই চুক্তিই আফগান বাহিনীর আশা নিভিয়ে দিয়েছে।

দ্বিতীয়ত, মার্কিন সরবরাহকারীরা আফগান বাহিনীকে সরঞ্জাম দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। মেনটেইনেন্স সুবিধাও আর পাওয়া যাচ্ছিল না। অথচ যুদ্ধের ময়দানে এগুলো ছিল খুবই জরুরি।

তৃতীয়ত, গনির সরকারে দুর্নীতির মহামারী। সাদাতের ভাষায়, ওই দুর্নীতি সেনাবাহিনীর নেতৃস্থানীয়দেরও গ্রাস করেছিল। তাতে মাঠ পর্যায়ের সৈন্যরা কার্যত পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল, পরিস্থিতি এতটাই নাজুক হয়ে পড়েছিল যে, সারানোরও আর উপায় ছিল না।

এই আফগান কমান্ডারের ভাষায়, দুর্নীতি যে আফগান সরকার আর সেনাবাহিনীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছিল, তার ভুরি ভুরি  প্রমাণ আছে, আর এটা পুরো আফগান জাতির জন্যই একটি ‘ট্র্যাজেডি’।

সাদাত লিখেছেন, ট্রাম্প-তালেবান শান্তি চুক্তির পর যুদ্ধে মার্কিন এবং পশ্চিমা বাহিনীর অংশগ্রহণ কমিয়ে ফেলা হয়েছিল। যুদ্ধের ময়দানে আফগান বাহিনীকে আকাশ থেকে সহায়তা দিত মার্কিন বিমান বাহিনী। সেই নিয়মও রাতারাতি বদলে ফেলা হয়েছিল। তাতে তালেবান আরও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ফলে আজকের যে পরিণতি, তার সূচনা হয়েছিল তখন থেকেই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

বিস্তারিত জানতে এসএমএস/ফোন করুন 👇

বিস্তারিত জানতে ছবিতে 👇 ক্লিক করে–ফেসবুকে এসএমএস করুন 👇

© All rights reserved © 2021
Theme Customized BY IT Rony