কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘আমিই দলের ফুলটাইম সভাপতি। কংগ্রেসকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলার জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা, ঐক্য এবং দলের স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।’ আজ শনিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৯ সালে রাহুল গান্ধীর পদত্যাগের পর থেকে দলের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সোনিয়া গান্ধী। আজকের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আগামী সভাপতি নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈঠকের শুরুতে নিজের ভাষণে সোনিয়া স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি কংগ্রেসের পূর্ণ সময়ের সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনে রাজি। মূলত দলের ‘জি ২৩’ গ্রুপের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
তবে বৈঠকের একটি সূত্র জানায় যে আগামী সেপ্টেম্বরে পূর্ণ সময়ের সভানেত্রী পেতে চলেছে কংগ্রেস।
কপিল সিবল, গোলাম নবী আজাদের মতো নেতারা সভাপতি হিসেবে স্থায়ী কাউকে চেয়ে বারবার দাবি জানাচ্ছিলেন। মুখ খুলছিলেন সংবাদমাধ্যমের সামনেও। এত দিন এটা নিয়ে একটি কথাও বলেননি সোনিয়া। আজ কংগ্রেসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সেই বিক্ষুব্ধ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি অনুমতি দেন, তাহলে আমি কংগ্রেসের পূর্ণ সময়ের সভানেত্রী হতে পারি। আমি বরাবরই খোলামেলা পরিবেশে বিশ্বাস রেখে এসেছি। তাই সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে আমার সঙ্গে কথা বলার কী প্রয়োজন?’
সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘কংগ্রেসকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলার জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা, ঐক্য এবং দলের স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। দল আসন্ন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে। আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু তিনি এটাও জোর দিয়ে বলেন, ‘যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও এককভাবে দলের স্বার্থের দিকে মনোনিবেশ করি, তাহলে আমি নিশ্চিত যে আমরা ভালো করব। আমি এ বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন যে আমি অন্তর্বর্তীকালীন কংগ্রেস সভাপতি।’ তিনি আরও বলেন যে সাংগঠনিক নির্বাচনের জন্য একটি নতুন তারিখ শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।
প্রায় দেড় দশক কংগ্রেসের সভানেত্রী ছিলেন সোনিয়া গান্ধী। তারপর ২০১৭ সালে সেই দায়িত্ব তুলে দেওয়া রাহুল গান্ধীর হাতে। তবে ২০১৯ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল গান্ধী। তারপর থেকেই দলের কাঠামো বদল ও স্থায়ী সভাপতির পক্ষে কথা বলে আসছেন কপিল সিবল, গোলাম নবী আজাদের মতো নেতারা। গত বছর থেকে কংগ্রেসে সাংগঠনিক নির্বাচন চেয়ে সরব দলের নেতাদের একাংশ। যাঁরা এই দাবি তুলেছেন, তাঁদের ‘জি-২৩’ বলা হচ্ছে। কারণ, ২৩ জন নেতা এ–সংক্রান্ত দাবি জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন সোনিয়া গান্ধীকে। সেই তালিকায় গোলাম নবী আজাদ, আনন্দ শর্মার মতো কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতারা আছেন। তাঁরা পরবর্তী সময়েও একই দাবিতে সরব হয়েছিলেন।