1. meghnaonline24@gmail.com : দৈনিক মেঘনা :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৩ অপরাহ্ন

বিস্তারিত জানতে এসএমএস/ফোন করুন 👇

কি ঘটেছে আফগানিস্তানে-বারাদার জিম্মি, আখুন্দজাদা নিহত?

রির্পোটারের নাম:
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১৭৮ ০০০

আফগানিস্তানের ক্ষমতা কাঠামোর শীর্ষ এক এবং দুই নম্বরে থাকা তালেবানের দুই নেতাকে ঘিরে এক ধরনের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। আফগানিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা বারাদারকে কি কান্দাহারে জিম্মি করে রাখা হয়েছে? তালেবানের প্রধান হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা কি নিহত হয়েছেন?

সোমবার ব্রিটিশ ম্যাগাজিন দ্য স্পেকটেটরের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

চলতি মাসের শুরুর দিকে কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্কের একজন নেতার আক্রমণের শিকার হন তিনি। এরপর থেকে বারাদারকে জনসম্মুখে খুব বেশি দেখা যায়নি। গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয়-মালিকানাধীন টেলিভিশনে এসে নিজের আহত কিংবা নিহত হওয়ার খবরকে ‌‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দেন মোল্লা বারাদার।

কিন্তু পর্যবেক্ষকরা যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ম্যাগাজিন দ্য স্পেকটেটরকে বলেছেন, ‘তিনি যে বার্তা দিয়েছেন সেটি জিম্মি ভিডিও বার্তার মতো মনে হয়েছে।’

ব্রিটিশ এই ম্যাগাজিন বলেছে, ‘মোল্লা বারাদার উপজাতীয় জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন; যারা তাকে সমর্থন করেন। কিন্তু একই সময়ে রাষ্ট্রীয়-মালিকানাধীন টেলিভিশন নেটওয়ার্কে একটি বিবৃতি পাঠে তাকে বাধ্য করা হয়েছে। ওই টেলিভিশনের নিয়ন্ত্রণ এখন তালেবানের হাতে রয়েছে।’

বারাদার কি পরাজিত?

দ্য স্পেকটেটর বলেছে, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর নতুন সরকারের প্রধান হিসেবে মোল্লা বারাদারের নাম শোনা গেলেও আফগানিস্তানে সরকার গঠনের আলোচনার সময় তিনিই ছিলেন প্রধান ক্ষতিগ্রস্ত। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে সরকার গঠনের আলোচনা-সহিংসতার পর তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

হাক্কানিদের সঙ্গে আলোচনার সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়; সেই সময়ই বারাদারকে উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার মতো বড় পদক্ষেপ নেয় তালেবান।

আফগানিস্তানের নতুন সরকারে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর আরও বেশি সংশ্লিষ্টতা চেয়েছিলেন বারাদার। এছাড়া তালেবানের পতাকার পাশাপাশি আফগানিস্তানের পতাকাও উড়ানোর যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি।

আলোচনায় মোল্লা বারাদার অন্তর্ভুক্তিমূলক মন্ত্রিসভা গঠনের প্রস্তাব দেন; যে মন্ত্রিসভায় অ-তালেবান নেতা, জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি চেয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, এ ধরনের মন্ত্রিসভা গঠন করা হলে পুরো বিশ্বের কাছে তা বেশি গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু বৈঠকের এক পর্যায়ে চরমপন্থী গোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা খলিল উল রহমান হাক্কানি তার চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ান এবং মোল্লা আব্দুল গনি বারাদারকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন।

দ্য স্পেকটেটর বলেছে, ওই সময় বারাদার ও হাক্কানির সমর্থকদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের টেবিলে রাখা চায়ের বিশাল ফ্ল্যাস্ক ও অন্যান্য আসবাবপত্র পড়ে যায়। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সূত্রগুলো বলছে, পরে তাদের দেহরক্ষীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে একে অপরকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকেন। এতে অনেকে নিহত এবং আহত হন।

এই ঘটনার পর অক্ষত অবস্থায় রাজধানী কাবুল ছেড়ে কান্দাহারে তালেবানের ঘাঁটিতে তাদের সর্বোচ্চ ও আধ্যাত্মিক নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার কাছে চলে যান বারাদার।

এ বিষয়ে অবগত কয়েকজন বলেছেন, মন্ত্রিসভা গঠনের আলোচনার সময় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রধান জেনারেল ফাইজ হামিদ কাবুলে ছিলেন; তিনি বারাদারের পরিবর্তে হাক্কানিদের সমর্থন দেন। যদিও শান্তি আলোচনায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করতে পাকিস্তানের কারাগারে আট বছর বন্দি থাকা বারাদারকে মুক্ত করেছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন।

দ্য স্পেকটেটর বলেছে, আইএসআই প্রধান আফগানিস্তানের নতুন সরকারের সব গুরুত্বপূর্ণ পদ পাকিস্তানের অনুগতদের জন্য নিশ্চিত করেন।

সরকারের প্রধান পদগুলোতে চরমপন্থী গোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্কের সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া দোহা শান্তি আলোচনায় যারা অংশ নিয়েছিলেন নতুন সরকারে তারা উপেক্ষিত হন।

মাথাবিহীন তালেবান?

বারাদার কান্দাহারে থাকলেও হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা কোথায় আছেন তা এখনও জানা যায়নি। তালেবান বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, আখুন্দজাদা শিগগিরই জনসম্মুখে আসবেন; কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে দেখা যায়নি। আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখলের এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে।

আখুন্দজাদা হয়তো মারা গেছেন সেই গুজবও তুলে ধরেছে ব্রিটিশ ম্যাগাজিন দ্য স্পেকটেটর। ২০১৩ সালেও একই ধরনের গুজব ছড়িয়েছিল তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের মৃত্যু ঘিরে। ওমরের মৃত্যুর তথ্য প্রায় দুই বছর পর ২০১৫ সালে স্বীকার করে তালেবান।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোল্লা হাসান আখুন্দর কোনও ক্ষমতা নেই বলেই মনে হচ্ছে। এর অর্থ- ২০ বছর আগের শাসনকালের তুলনায় কার্যত মাথাবিহীন তালেবান এখন আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ করছে। পাশাপাশি আফগানিস্তানে ক্রমবর্ধমান ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠা হাক্কানিদের লাগাম টানার চ্যালেঞ্জও ভারী হচ্ছে তালেবানের জন্য।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

বিস্তারিত জানতে এসএমএস/ফোন করুন 👇

বিস্তারিত জানতে ছবিতে 👇 ক্লিক করে–ফেসবুকে এসএমএস করুন 👇

© All rights reserved © 2021
Theme Customized BY IT Rony