মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে টঙ্গীতে স্কুল ছাত্র হত্যা
টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের টঙ্গীতে মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে উত্তরা মডেল স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ইসমাইলকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামী রবিউল ইসলাম রবু (২২) গত ১০ সেপ্টেম্বর গাজীপুর আদালতে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শাহ আলম জানান, স্কুল ছাত্র ইসমাইল হোসেন উত্তরা থেকে গত ১৬ মার্চ ২০২১ ইং তারিখে নিখোঁজ হয়। অনেক খোজাঁখুজি করে ছেলের সন্ধান না পেয়ে দরিদ্র মুদি দোকানদার বাবা নূরনবী আশ্রয় নেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তুরাগ থানায় ১৮ মার্চ ২০২১ইং তারিখে করেন একটি নিখোঁজ জিডি করেন। গত ১৯ মার্চ ২০২১ইং তারিখে গাজীপুর মেট্রোপলিটন টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন গুটিয়ায় তুরাগ নদীর শাখা নদীর কিনারায় একটি লাশ ভাসমান অবস্থায় আছে মর্মে খবর পেয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ এসআই সাব্বির হোসেন এর আন্তরিকতায় (মামলার বাদী) অজ্ঞাতনামা লাশটি উদ্ধারপূর্বক সুহরতহাল রিপোর্ট লিখে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। পুলিশ নিখোঁজ ইসমাইলের বাবা নুরনবীর নিকট একাধিকবার গিয়ে এবং থানায় নিয়ে আসে। নুরনবী লাশটি দেখে প্রথমে চিনতে না পারলেও পরে জামাকাপড় দেখে চিৎকার করে উঠে নিশ্চিত করে এটা তার সন্তান ইসমাইল এর লাশ। তথাপিও ভিকটিম ইসমাইল হোসেন যেই সেলুনে চুল কাটত সেই সেলুনের মালিক কে নিয়ে এসে মাথার চুলের কাটিং দেখে আমরা ভিকটিমের পরিচয় অধিকতর নিশ্চিত হয়। লাশটির পরিচয় নিশ্চিত হবার পর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির—পিপিএম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) ইলতুৎ মিশ মামলাটি অধিকতর গুরুত্ব বিবেচনায় রহস্য উদঘাটনে আমাদেরকে ধারাবাহিক তদন্তের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সার্বিক দিক নির্দেশনায় হত্যাকান্ডের শিকার ইসমাইলের পিতা নুরনবীর সাথে কথা বলে জানা যায় একটি নাম্বার থেকে একাধিকবার ফোন দিয়ে ১০/১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। এই তথ্যের উপড় মামলাটি নতুন মোড় নেয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব—ইন্সপেক্টর ইয়াসিন আরাফাত নাম্বারের রেজিষ্ট্রেশন বের করে দেখেন নাম্বারটি একজন মহিলার নামে রেজিষ্ট্রেশন করা এমতাবস্থায় সে দীর্ঘ কললিস্ট সিডিআর সংগ্রহ করে। মোবাইলের সিডিআরের তথ্যানুযায়ী এক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে মহিলা জানায় তার মোবাইলটি একমাস পূর্বে হারিয়ে যায়। কোথায় হারিয়েছে জানতে চাইলে মহিলা জানায় সে হামীম গ্রুপের গার্মেন্টসে চাকরি করে এই তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা হামীম গ্রুপের সিসি ক্যামেরা রেকর্ড সংগ্রহ করেন এবং দেখতে পারেন এক মহিলা মোবাইলটি নিয়েছে। ঐ মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে জানায় সে মোবাইলটি তার স্বামী আতাউল কে দিয়েছে।এই সুত্র ধরেই এসআই/আরাফাত গ্রেফতার করে আতাউল কে। আতাউল হত্যার কথা স্বীকার করে জানায় টাকার লোভে তার বন্ধু রবিউল ইসলাম রবু ও নেয়ামুলের সহযোগিতায় তারা ইসমাইল কে অপহরণ ও হত্যা করে। তার তথ্যামতে গ্রেফতার হয় নেয়ামুল।কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে যায় রবিউল ইসলাম রবু।
উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিক—নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শুভ মন্ডল সঙ্গীয় এস আই অরবিন্দ বিশ্বাস তুরাগ থানাধীন, ডিএমপির এলাকা হতে সারা রাত অভিযান পরিচালনা করে ভোর ৬টার দিকে আসামী রবিউল ইসলাম রবু (২২) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।