1. meghnaonline24@gmail.com : দৈনিক মেঘনা :
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩২ অপরাহ্ন

বিস্তারিত জানতে এসএমএস/ফোন করুন 👇

সরকার চাইলে কোটা পরিবর্তন করতে পারবে, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ

রির্পোটারের নাম:
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪
  • ১৩৬ ০০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের কার্যকরী ও নির্দেশনা অংশ প্রকাশ করা হয়েছে। এ রায় পাওয়ার বিষয়টি  নিশ্চিত করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

কোটা নিয়ে ২০১৩ সালে দেওয়া আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারি অফিস আদেশ তুলে রায়ে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হলো। এ ছাড়া জেলা, নারী, প্রতিবন্দ্বী, আদিবাসী, জাতিগত সংখ্যালঘু বা ক্ষুদ্র ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও কোটা পদ্ধতি বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রায়ের এই আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে কোটা পুনর্বহাল করতে বলেছেন হাইকোর্ট।
তবে রায়ে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে সরকার কোটার অনুপাত বা শতাংশ কমাতে-বাড়াতে পারবে। কোটা পূরণ না হলে মেধা তালিকা থেকে কোটা পূরণের কথা বলা হয়েছে রায়ে।

রায় পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান বলেন,  “এক পৃষ্ঠার রায়টি পেয়েছি।
এটি পূর্ণাঙ্গ রায় না। এই এক পৃষ্ঠার রায়ে কার্যকরী ও নির্দশনা (অপারেটিভ পোরশন) অংশ রয়েছে।”এই রায় দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করবে কিনা, জানতে চাইলে এ আইন কর্মকর্তা বলেন, “পূর্ণাঙ্গ রায় পেলেই লিভ টু আপিল করা হবে।”

২০১৮ সলে কোটা পদ্ধতি বাতিল করার আগ পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষণ করা হতো।

এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ছিল ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ কোটা। এই কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ছয় বছর আগে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানের আন্দোলন গড়ে তোলেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশিরা। সে সময় এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন নুরুল হক নুরসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।এ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে ২০১৮ সালের ২ জুন একটি কমিটি করে সরকার। সব কাজ শেষে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোনো কোটা না রেখে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নিয়ম চালু করতে ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিটি।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পর ৩ অক্টোবর তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হলে সেখানে কোটা বাতিলের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। পরদিন ৪ অক্টোবর কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করেন জনপ্রশাসন সচিব।পরিপত্রে বলা হয়, নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হল। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।

২০২১ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিলের এই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন। রিটে প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট ওই বছর ৭ ডিসেম্বর রুল জারি করেন।

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা পরিপত্র কেন সেচ্ছাচারী ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। মন্ত্রীপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যানসহ পাঁচ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সে রুলে চূড়ান্ত শুনানির পর গত ৫ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষনা ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। এ রায়ের কার্যকরী ও নির্দেশনা অংশ বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়। এক পৃষ্ঠার রায়টি লিখেছেন বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি খিজির হায়াত। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সহমত ব্যক্ত করেছেন।

এ রায়ের পর ফের কোটাবিরোধী আন্দোলনে নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও চারকিপ্রত্যাশীরা। এদিকে এ রায় স্থগিত চেয়ে সরকার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে। কিন্তু চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ না করে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সে ধারাবাহিকতায় গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। শুনানির পর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভটু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলেন। রাষ্ট্রপক্ষের এই লিভটু আপিল করার অপেক্ষার মধ্যে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার (৯ জুলাই) আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। সে আবেদনে শুনানির পর কোটা পদ্ধতি সংক্রান্ত বিষয়বস্থুর (২০১৮ সালে জারি করা কোটা বাতিলের পরিপত্র)  ওপর স্থিথাবস্থা দেন সর্বোচ্চ আদালত।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

বিস্তারিত জানতে এসএমএস/ফোন করুন 👇

বিস্তারিত জানতে ছবিতে 👇 ক্লিক করে–ফেসবুকে এসএমএস করুন 👇

© All rights reserved © 2021
Theme Customized BY IT Rony