রাস্তা দখল করতে পারলেই এই স্বৈরাচারের আগের স্বৈরাচারদের মতো পতন ঘটবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, এই সরকার আগামী ২০২৩ সালের নির্বাচন করে যেতে পারবে না। তার আগেই বিদায় নেবে। রাস্তায় সকল সমস্যার সমাধান হবে। খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০ নিয়ে আমরা এগুচ্ছি। তার চূড়ান্ত রূপরেখা এখনো আসেনি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ হলে সরকার হঠানোর চূড়ান্ত রূপরেখা দেব।
বুধবার (৩ আগস্ট) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত ‘সরকার ইভিএম-এ নির্বাচন করতে চায় কেন?’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ইভিএম হলো ভোট ডাকাতির মেশিন। তাই ভোট শেষে পেপার ট্রেইল দেওয়া হয় না। নির্বাচন কমিশন সংলাপের নামে নাটক করছে। কমিশন বলেছে সংলাপে অংশ নেওয়া অধিকাংশ দল ইভিএমের বিরোধিতা করছে। আমরাও ইভিএম চাই না। যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে তাদের অধীনে নির্বাচন করা একটি পোস্ট বক্স ছাড়া কিছুই না। তাই ইভিএম বাতিল করতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার নতুন পদ্ধতিতে ভোট ডাকাতি করে টিকে থাকতে চায়। এটা হতে দেওয়া যায় না। আমরা আব্রাহামের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা থেকে অনেক দূরে চলে গেছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়েছে। বর্তমান ক্ষমতাসীনরা গণতন্ত্র ধ্বংস হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছে। এখন শেখ হাসিনা সরকার অঘোষিতভাবে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। মেগা প্রজেক্টের নামে করেছে মেগা দুর্নীতি। এই দুর্নীতির মাধ্যমে আমাদের নিজস্ব রিজার্ভকে সংকটে ফেলেছে।
বিদ্যুৎ নিয়ে তিনি বলেন, সরকার সাময়িক ব্যবস্থা কুইক রেন্টালকে প্রতিষ্ঠা করেছে স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে। সংসদে ইনডেমনিটি দিয়ে তাদেরকে যা ইচ্ছা তা করার সুযোগ দিয়েছে। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে কোটি কোটি টাকা দিয়েছে অথচ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়নি। এরা সবাই সরকারপুষ্ট। দেশকে আমদানি নির্ভর করে দিয়েছে। কারণ আমদানি করতে পারলেই দুর্নীতি করা যায়। আইএমএফ সরকারকে বলছে সরকারের হিসেব সঠিক নয়। সরকার বলছে আইএমএফকে কেন সব হিসেব দিতে হবে। আবার অর্থমন্ত্রী আইএমএফের কাছ থেকে মূলধনের জন্য ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছেন।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কায় প্রথম সংকট শুরু হয়েছিল জ্বালানি আর লোডশেডিং দিয়ে আমাদের এখানেও সেইভাবে শুরু হয়েছে। সুতরাং দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছে। কিছুদিনের মধ্যেই দেউলিয়াত্ব দেখবেন। শ্রীলঙ্কার স্বৈরতন্ত্রের মতো বাংলাদেশেও ফ্যাসিবাদ চলছে।
তিনি আরও বলেন, গত নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনকে আমরা নেতা বানালেও নির্বাচন ঘোষণার পর তিনি বললেন তিনি নির্বাচন করবেন না। তখনই ঐক্যফ্রন্টের রূপরেখা ধূলিসাৎ হয়ে যায়। ফলে ফ্যাসিবাদী সরকার বাংলাদেশের বৃহত্তম দল বিএনপিকে ৬টি আসন ধরিয়ে দেয়। আগের মতো বিপর্যয় যাতে না আসে সেজন্য আমরা দলগুলোকে যাচাই বাছাই করছি।
মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার বলছে রিজার্ভের সংকট নেই, তাহলে ব্যবসায়ীদের এলসি কেন রিফিউজ করে দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপিকে সরকারের হারিকেন ধরিয়ে দেওয়া নিয়ে বলেন, ৫ কোটি হারিকেন কেনার টাকা সরকারের নেই। তাই তারা হারিকেন ধরিয়ে দিতে পারবে না। জনগণ তাদেরকে হারিকেন ধরিয়ে দেবে।
বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন-অর-রশিদ, বিএনপির ফরিদপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিস ইসলাম, শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, ড. মো. আব্দুস সেলিম, আনোয়ার হোসেন বুলু, কৃষিবিদ শাহাদাত হোসেন বিপ্লব, মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।