ভূমি দস্যুদের হাত থেকে জানমাল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছে সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার শেখ মুজিব নগর খলিশাখালী ভূমিহীন আবাসন কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ভূমিহীন জনগণ। তারা বলেছেন, ‘ভূমি দস্যুদের হামলা-মামলা ও হুমকিতে আমরা চরম আতংকের মধ্যে আছি। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে দেন-দরবার করে কোন লাভ হয়নি। তাই অসহায় ভূমিহীনদের জানমাল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ জরুরি।’
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভূমিহীন নেতা সুনীল স্বর্ণকার। এ সময় শেখ মুজিব নগর খলিশাখালী ভূমিহীন আবাসন কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ভূমিহীন জনগণের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জরিনা বেগম, বিজয় স্বর্ণকার, জাহানারা আক্তার, মো. আবুল হোসেন, রফিকুল ইসলাম, গোলাপ ঢালী, শাহজাহান গাজী, সফুরা খাতুন, রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, খাস জমি মুক্তিযোদ্ধা ও ভূমিহীনদের মধ্যে অগ্রধিকার ভিত্তিতে বন্দোবস্ত দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু ভূমিহীনদের আশ্রয়স্থল খলিশাখালীর ৪৩৯ দশমিক ২০ একর (এক হাজার তিনশত বিঘা) খাস জমি দখলে নিয়ে মাছ চাষ করতে চায় ভূমি দস্যুরা। এজন্য তারা ভূমিহীনদের উপর কয়েকদফা সশস্ত্র হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। ভূমিহীনদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।
আরও বলা হয়, মালিক দাবিদার ভূমিদস্যু আতিকুর ও আনারুল ভূমিহীনদের নামে গত ১২ সেপ্টেম্বর পৃথক দু’টি ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করেছে। সরকারি জমি দখলবাজরা এখনও ভূমিহীনদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করে জমি দখলের জন্য অপপ্রচার চালানোর পাশাপাশি নানান ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছে। অন্যদিকে ন্যায় বিচার বঞ্চিত ভূমিহীনরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত থেকে রক্ষা এবং জানমালের নিরাপত্তায় জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ওই খাস জমি উদ্ধার করে রিসিভার নিয়োগের জন্য ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি সাতক্ষীরা জজ আদালতে আবেদন জানানো হয়। এরপর আদালতে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত ৪ ফেব্রুয়ারী সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে ওই জমি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য আদেশ দেন। এরপর গত ১৩ এপ্রিল ওই এক হাজার ৩২০ বিঘা জমি ভূমিহীনদের নামে স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য রবিউল ইসলাম, গোলাপ ঢালী ও হাবিবুল্লাহ বাহার সরকারের সংশ্নিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছেন। বর্তমানে সহস্রাধিক ভূমিহীন পরিবার ওই জমি দখলে নিয়ে সেখানে বসবাস করছে।