আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চলমান অভিযানে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত সারা দেশে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত) ২৭টি জেলায় ১৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা যায়, ১৭ জুলাই থেকে দেশের মহানগর, জেলা ও থানা-পুলিশ সূত্র থেকে মামলা ও গ্রেপ্তারের তথ্য সংগ্রহ করছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ-সহিংসতার ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত ১১ হাজার ১১২ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত মোট মামলা হয়েছে ৭২১টি। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন মামলা হয়েছে ৬টি।এর বাইরে ঢাকা জেলার ধামরাই, সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও দোহার থানায় গতকাল পর্যন্ত মামলা হয়েছে ২৬টি। এসব থানার অধীনে গ্রেপ্তার হন ২৮৭ জন।ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে রাজধানীতে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়াল ৩ হাজার ৩৯। ঢাকা নগরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন মামলা হয়েছে তিনটি। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট ২৭৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর বাইরে ঢাকা জেলার ধামরাই, সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও দোহার থানায় গতকাল পর্যন্ত মামলা হয়েছে ২৬টি। এসব থানার অধীনে গ্রেপ্তার হন ২৮৭ জন।দেশজুড়ে গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের একটি বড় অংশ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং দল দুটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম মহানগরে গত বৃহস্পতিবার রাতে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে জেলায় গ্রেপ্তার নেই। এ নিয়ে মহানগর ও জেলায় মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৯৯২। চট্টগ্রাম নগর ও জেলার মোট ৩৪টি মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৩৮ হাজার ২০০।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে গ্রেপ্তার তুলনামূলক বেশি হচ্ছে রাজশাহী, রংপুর ও বগুড়ায়। রাজশাহী মহানগর ও জেলা মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৮টি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এখানে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বগুড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে দুটি মামলা হয়েছে। এখানে নতুন করে গ্রেপ্তারও হয়েছেন আটজন। এ নিয়ে এখানে মোট গ্রেপ্তার ১৭৭ জন ও মোট মামলা ১৭টি।
খুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে এখানে মোট ১২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ নিয়ে এখানে ১৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এ ছাড়া যশোরে নতুন করে ১২ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এদিকে হবিগঞ্জে নতুন করে ৬ জনকে গ্রেপ্তারের পর এখানে গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩।কোটা সংস্কারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে আন্দোলন শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন ঘিরে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের পর এটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন থেকে আন্দোলন কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
দেশজুড়ে গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের একটি বড় অংশ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং দল দুটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী বলে জানা গেছে। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করা বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। শিক্ষার্থী গ্রেপ্তারের ঘটনাও আছে। তবে পুলিশ দাবি করছে, হামলা ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।