রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেক এলাকাবাসী বাড়িছাড়া হয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাদকসেবী তাজুল ইসলামকে (৫৫) হারাগাছ থানার পুলিশ আটক করে। এর কিছুক্ষণ পরেই তাজুল ঘটনাস্থলে মারা যান। তাকে পুলিশ পিটিয়ে মেরেছে এমন কথা ছড়িয়ে পড়লে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ জনতা ও পুলিশের মাঝে কয়েক ঘন্টা উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করে। এসময় পুলিশের একটি গাড়ির সামনের অংশ ভাংচুর, হারাগাছ থানার ডিউটি অফিসারের রুম, নারী সেবা ডেস্কসহ ৩টি কক্ষ ভাংচুর করা হয়।
পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে অর্ধশতজন আহত হয়েছে।
ওই ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার সকালে হারাগাছ পৌর এলাকায় অন্য দিনের মতো দোকানপাট খুলেছেন ব্যবসায়ীরা। লোকজনও তাদের নিত্য দিনের কাজে ফিরেছেন। কিন্তু গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকাবাসীদের অনেকে বাড়িছাড়া হয়েছেন বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার সকালে হারাগাছ থানায় গিয়ে দেখা গেছে, থানার কয়েকটি কক্ষে ভাঙ্গা কাঁচ, সাইনবোর্ড, হারাগাছ পৌরসভার সামনে রাখা পুলিশ ভ্যানের সামনের ভাঙ্গা কাঁচের গুড়া পড়ে রয়েছে। ইট-পাটকেলগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে থানার উঠান থেকে।
যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পৌর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।
মাদকসেবী তাজুল ইসলামের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর, সংঘর্ষে জড়িতদের শনাক্ত ও মামলার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে পুলিশ।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, ‘নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে আসলে বোঝা যাবে কি কারণে তিনি মারা গেছেন। অপরদিকে থানায় হামলা, ভাংচুর ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ যারা তৈরি করেছে তাদের ভিডিও দেখে শনাক্ত করা হচ্ছে। এনিয়ে একটি মামলার প্রস্তুতিও চলছে। রাতে কিছু সন্দেহভাজনদের আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’