জিয়াউর রহমানের কবরে নেতা-কর্মী নিয়ে আসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দিনি বলেছেন, ‘আজকে আমাদেরকে নেতা-কর্মী নিয়ে আসতে দেয়া হয়নি। সরকার বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে, সম্পূর্ণভাবে তারা বিধি-নিষেধ জারি করেছে।’
আজ বুধবার দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।
বিচারপতি আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) বিলুপ্ত করে বিএনপির যাত্রা শুরু হয়। মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), কাজী জাফর আহমেদের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি, শাহ আজিজুর রহমানের মুসলিম লীগ, মাওলানা আবদুল মতিনের বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও রসরাজ মন্ডলের বাংলাদেশ তফসিলি ফেডারেশন-এই পাঁচটি দল যুক্ত হয়।
বুধবার সকাল ১১টায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা জানান। তারা প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
এই সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাবেক সাংসদ অবসরপ্রাপ্ত আক্তারুজ্জামান, মহানগর বিএনপির উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিনের রফিকুল আলম মনজু, যুব দলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। এ সময়ে দলের স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু ও ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক উপস্থিত ছিলেন।
চন্দ্রিমা উদ্যানে কঠোর বিধিনিষেধ
সংসদ অধিবেশন উপলক্ষে সকাল থেকে চন্দ্রিমা উদ্যানে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সাধারণ প্রবেশাধিকারে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। ফলে বিএনপির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শ্রদ্ধা নিবেদনে নেতা-কর্মীদের প্রবেশ করতে দেয়নি পুলিশ।
সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে চন্দ্রিমা উদ্যানের প্রবেশ পথ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ১০ থেকে ১২ জন পায়ে হেঁটে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে আসেন। আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করতে দিলেও এবার পুলিশ তা দেয়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, ‘আজকে আমাদেরকে নেতা-কর্মী নিয়ে আসতে দেয়া হয়নি। সরকার বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে, সম্পূর্ণভাবে তারা বিধি-নিষেধ জারি করেছে।পুলিশ আগেই জানিয়ে দিয়েছে আজকে ৩০ জনের বেশি আসা যাবে না। এটা নাকি এখন তাদের (পুলিশ) কন্ট্রোলের মধ্যে নেই। আরও বড় নিরাপত্তার আন্ডারে চলে গেছে। এভাবে তারা বাধার সৃষ্টি করেছে, আমাদেরকে বাধার সৃষ্টি করেছে।’
তেঁজগাও জোনের এডিসি রুবাইয়াত জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে বাধা দেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। আপনারা (সাংবাদিকরা) উপস্থিত ছিলেন কারা কারা এসেছেন দেখেন। প্রত্যেকে কিন্তু বাধাহীনভাবে প্রবেশ করেছেন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করে চলে গেছেন। সুন্দরভাবে তারা তাদের কর্মসূচিটি সম্পন্ন করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন আজকে বিকেলে সংসদ অধিবেশন বসছে। এজন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা আছে, কিছু বিধি-নিষেধ আছে সেটা জেনেই তারা (বিএনপি) তাদের কর্মসূচি সম্পন্ন করেছেন।’