অভ্যুত্থানের পর জান্তা সরকার রাখাইনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। রাখাইনে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আরাকান আর্মি সরকারি সেনাদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বহু দিন ধরে। তবে রাখাইনে সেলফ ডিফেন্স ফোর্সেসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলে সেই যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যায়।
মিয়ানমারজুড়ে সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বুধবার এক বিবৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বিবৃতিতে তারা অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ এবং বেসামরিক লোকদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
আরাকান আর্মির একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাখাইনের মংডুতে কয়েক মিনিট ধরে দুই পক্ষের (সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মি) লড়াই চলে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই এলাকায় প্রবেশ করার কারণে এই সংঘর্ষ হয়। তবে হতাহতের বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমার। বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশগুলোর একটি এটি। সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ জনগণ। সংঘাতের মুখে পড়ে ২০১৯ সালে রাখাইনজুড়ে ২ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা ও সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধধর্মাবলম্বী রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। কয়েক দশক ধরে সংঘাতে বিপর্যস্ত রাজ্যটি। ২০১৭ সালে এই রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান চালানো হয়। এতে প্রাণ বাঁচাতে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। অনেকে প্রাণ হারায়।জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযানকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এর মধ্যে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে দেশটিতে অস্থিরতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সঙ্গে মিয়ানমারজুড়ে জান্তার বিরুদ্ধে সেনাশাসনবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর প্রতিরোধ লড়াইও জোরদার হয়েছে। সম্প্রতি মিয়ানমারের মান্দালয়, ইয়াঙ্গুন, সেগিং, মাগউইসহ বিভিন্ন শহর এবং কায়াহ ও শান রাজ্যে জান্তা সেনাদের সঙ্গে তুমুল লড়াই হয়েছে তাদের। এতে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
এদিকে মিয়ানমারজুড়ে সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বুধবার এক বিবৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বিবৃতিতে তারা অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ এবং বেসামরিক লোকদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।