জাকার্তার বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন কাজী আনারকলির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে সরকার। ইতোমধ্যে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে বুধবার এ তথ্য জানা গেছে।
এ ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসফি বিনতে সামসকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ থেকেই তদন্ত কমিটি আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করেছে।
এর আগে বাসায় নিষিদ্ধ মাদক মারিজুয়ানা রাখার অভিযোগে নাইজেরিয়ান বন্ধুসহ বাংলাদেশী কূটনীতিক কাজী আনারকলিকে আটক করে জাকার্তা পুলিশ। প্রায় ২৪ ঘণ্টা তিনি বন্দি ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের ডিটেনশন সেন্টারে। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া সরকারের বদান্যতায় তিনি মুক্তি পান।
আটকের পর জাকার্তার বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমেই চলে নেগোসিয়েশন। সূত্র বলছে, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইন্দোনেশিয়ার মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত কঠোরতার সাথে কাজী আনারকলির বাসায় অভিযান চালায়, মাদক উদ্ধার করে এবং নাইজেরিয়ান বন্ধুসহ তাকে তুলে নিয়ে যায়। জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের লস এনজেলস থেকে জোগাড় হওয়া ওই বিদেশী বন্ধুর সাথেই জাকার্তার বাসা শেয়ার করতেন আনারকলি।
জানা গেছে, মাদক নিয়ন্ত্রণে ইন্দোনেশিয়ার সরকার অত্যন্ত কঠোর। তারা চিকিৎসার কাজেও এখন পর্যন্ত মারিজুয়ানার ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি। মাদক রাখা বা সেবনে যাবজ্জীবন এমনকি মৃত্যুদণ্ডেরও বিধান রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার আইনে। সূত্র জানায়, কূটনীতিকের বাসায় মাদক রয়েছে এটা নিশ্চিত হওয়ার পরই হত ৫ই জুলাই তারা অভিযান পরিচালনা করে। তাকে আটক করে দ্রুততম সময়ে দেশত্যাগের নোটিশ দেয় দেশটি।
তার কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আনারকলির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশ মিশনের উপ-প্রধান কাজী আনারকলির বাসায় মাদক পাওয়া এবং তাকে প্রত্যাহারের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক ও বিব্রতকর’ বলে মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য, কূটনৈতিক দায়িত্ব থেকে আনারকলিকে ফেরত আনার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে বাসার গৃহকর্মী নিখোঁজের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস থেকে ২০১৭ সালে তাকে ফেরত আনা হয়েছিল। পররাষ্ট্র ক্যাডারের ২০ ব্যাচের কর্মকর্তা আনারকলি ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেল ছিলেন। মার্কিন সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেই তাকে জাকার্তায় জরুরি পদায়ন করে ইন্দোনেশিয়ায় কূটনৈতিক মিশনে পাঠানো হয়।