দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবীরা গত সপ্তাহে বিশ্ব আদালতের কাছে এ ইস্যুতে জরুরি ব্যবস্থা আরোপের আবেদন করে বলেছিলেন যে, ফিলিস্তিনি জনগণের বেঁচে থাকা নিশ্চিত করার জন্য দক্ষিণ গাজা শহরে ইসরায়েলের আক্রমণ বন্ধ করতে হবে।
বিশ্ব আদালতের রায় চূড়ান্ত এবং তা মানার জন্য জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাধ্য থাকলেও অতীতে এর রায়কে উপেক্ষা করার উদাহরণ আছে। রায় মানতে বাধ্য করার কোনো প্রয়োগ ক্ষমতা নেই বিশ্ব আদালতের।
ইসরায়েল বরাবরই গণহত্যার অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ইসরায়েলি সরকারের এক মুখপাত্র গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো শক্তিই ইসরায়েলকে তার নাগরিকদের রক্ষা করা এবং গাজায় হামাসকে ধ্বংস করতে বাধা দিতে পারবে না।’
১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করা নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার আনা অভিযোগের নিন্দা করেছে ইসরায়েল। তারা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানায়। তবে আইসিজে ইসরায়েলের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
গত জানুয়ারি মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনের ভিত্তিতে বিশ্ব আদালতের এক আদেশে ইসরায়েলকে গণহত্যা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। তবে সামরিক অভিযান বন্ধের আদেশ দেওয়া হয়নি।
এরপরই দক্ষিণ আফ্রিকা রাফাহে অবস্থানরত ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষায় সেখানে বাড়তি জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করে আদালতের কাছে।
এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে আদালতের কাছে আরেকটি আদেশ চাওয়া হয়েছে, যাতে ইসরায়েল গাজায় জাতিসংঘ এবং মানবিক সহায়তা সরবরাহকারী সংস্থা, সাংবাদিক এবং তদন্তকারীদের অবাধে প্রবেশাধিকার দেয়।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আইনি সংস্থা যদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো রায় দেয় তবে তা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের ওপর আরও কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান গত সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েল ও হামাসের পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান। তাঁরা হলেন—ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট, গাজা উপত্যকার হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনাওয়ার, আল ক্বাসাম ব্রিগেডের প্রধান মোহাম্মদ দাইফ এবং হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করে। হামলায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হামাসকে নির্মূল করতে রাফাহে অভিযান প্রয়োজন বলে যুক্তি দেখিয়েছেন।