কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে থাকা কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলাই বানের পানিতে নিমজ্জিত। পানিবন্দি অন্তত ১৫ লাখ মানুষ। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।চারদিকে এখন বানভাসী মানুষের হাহাকার। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে ত্রাণ ও সুপেয় পানির সংকট।
লাঙ্গলকোটের বাসিন্দা আজিম উল্যাহ হানিফ বলেন, নাঙ্গলকোটের সাতবাড়িয়া গত কয়েক দিন ধরে পানির নিচে। এলাকাটা অনেক ভেতরে হওয়ায় কেউই সেখানে যাচ্ছেন না। যার কারণে তাদের খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থা পুরো উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামগুলোতে। সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা কম থাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এসব এলাকার বানভাসী মানুষজন।
স্থানীয়রা জানান, গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে বুড়িচং উপজেলার প্লাবনের খবর বেশি প্রচার হওয়ায় সারাদেশ থেকে দলে দলে নৌকা ও ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে প্রবেশ করছেন সেখানেই। কিন্তু এর আগেই ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে জেলার দক্ষিণের চারটি উপজেলা। এসব এলাকায় অন্তত ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি আছেন। সরকারি ত্রাণ সেসব মানুষদের জন্য খুবই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন সেসব এলাকার বানভাসীরা।
উপজেলার ঢালুয়ার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পুরো নাঙ্গলকোটে শুধু পানি আর পানি। অনেক অসুস্থ মানুষ, বৃদ্ধ মানুষ, গর্ভবতী নারীও আটকে আছে। তাদের উদ্ধার করা খুব দরকার, পাশাপাশি ত্রাণ সহায়তাও। দেশের বিত্তশালী মানুষদের এদিকটার প্রতি একটু মনযোগ দেওয়ারও অনুরোধ করব।
মনোহরগঞ্জ উপজেলার এক মাদরাসা শিক্ষক বলেন, বলেন, পুরো উপজেলার প্রায় সব সড়ক পানির নিচে। পুকুর দিঘি থেকে শুরু করে মাছের ঘের সবকিছুই প্লাবিত হয়েছে। মানুষের দুর্ভোগ এখন অবর্ণনীয়।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজালা রানী চাকমা বলেন, এই উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত অবনতির দিকে যাচ্ছে। আজও পানি কিছুটা বেড়েছে। মনোহরগঞ্জ উপজেলার অনেক দুর্গম এলাকা রয়েছে যেগুলোতে নৌকা ছাড়া যাওয়া একেবারেই অসম্ভব। আমাদের কাছে নৌকার প্রচুর সংকট রয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে পাঠিয়ে সেসব এলাকায় ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি যেন একটা মানুষও অভুক্ত না থাকে। তবে আমাদের আরও অনেক সহায়তা দরকার। আমি অনুরোধ করবো বিত্তশালীরা বানভাসী মানুষের জন্য এগিয়ে আসুন।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, নাঙ্গলকোটে ত্রাণ সরবরাহে কিছুটা সংকট আছে আমরা সেটা স্বীকার করছি। এ উপজেলার কিছু জায়গায় একেবারেই পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি ।