টঙ্গীতে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে ওই ঘটনার মীমাংসার কথা বলে অভিযুক্তের কাছে টাকা দাবি করেছে ছাত্রলীগের তিন নেতা। এছাড়াও ছাত্রলীগের ওই তিন নেতার বিরুদ্ধে অভিযুক্ত আমিনুল ইসলামের (২৫) কাছে টাকা দাবি এবং মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতারা হলেন, ৫৫নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম সানি, সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন হোসেন এবং সহসভাপতি পারভেজ ঢালী।
অন্যদিকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণে অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম জামালপুর জেলা সদরের হাজীপুরের ওরাঙ্গাটির শেখবাড়ির নুনু মিয়ার ছেলে। তিনি টঙ্গীর মিলগেট চুড়ি ফ্যাক্টরির পেছনের একটি বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া থাকেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় দেড় বছর আগে টঙ্গীর কলাবাগান বস্তির এক তরুণীর সঙ্গে আমিনুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দেড় মাস আগে আমিনুল ওই তরুণীকে গাজীপুর মহানগরের গাছা (তারগাছ) এলাকার একটি বাসায় নিয়ে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও তরুণীর ইমো অ্যাপে পাঠায়। ওই ভিডিওটি এলাকার আরও কয়েকজনের কাছে চলে যায়। ওই ভিডিওর বিষয়ে কথা বলতে রবিবার (৫ জুলাই) টঙ্গীর অলিম্পিয়া স্কুলমাঠে আমিনুলকে ডেকে নেয় ৫৫ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম সানি, সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন হোসেন এবং সহসভাপতি পারভেজ ঢালীসহ বেশ কয়েকজন যুবক। পরে সেখানে আমিনুলকে মারধর ও ভয় দেখিয়ে মীমাংসার কথা বলা হয়। এর জন্য এক লাখ ৮০ হাজার টাকা দাবি করে যুবকরা। তারা আমিনুলের কাছ থেকে তার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নেয় ও খোলা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগরের ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম সানি জানান, মেয়েটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তরুণীর অভিভাবক ও স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। মেয়েকে অন্যত্র বিয়ের জন্য ২ লাখ টাকায় ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। তবে বাকি অভিযোগগুলো মিথ্যা।
টঙ্গী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশিউর রহমান সরকার বাবু বলেন, বিষয়টা আমার জানা নেই। যদি এমন কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পূর্বেও অভিযোগ উঠায় বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে বহিষ্কার না করে তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান ছাত্রলীগের এই নেতা।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে গাছা থানার তারগাছ এলাকায় একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণের ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। এখনও এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। বিষয়টি জানার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। ওসি আরও বলেন, ছাত্রলীগের তিন নেতার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।